Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

Title
আসুন গাছ লাগাই, প্রাণ বাঁচাই’
Details

আসুন গাছ লাগাই, প্রাণ বাঁচাই’

আরও একটি সুন্দর ছবিঘর উপহার দিয়ে আপনারা আমার কৃতজ্ঞতাভাজন হলেন৷ বিশ্ব ধরিত্রী দিবস উপলক্ষ্যে ডয়েচে ভেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ছবিঘরে ছবির সংখ্যা কম থাকলেও, তথ্যে তা অসাধারণ রকম সমৃদ্ধ ছিল৷

ছবিঘরটির কথাগুলি চিন্তার খোরাক জোগায়, নাড়া দেয় আমাদের চেতনার মূলে৷ মাত্র ছয়টি ছবি ও সামান্য কিছু কথার মাধ্যমে বিশ্ব ধরিত্রী দিবসের ইতিহাস ও তাৎপর্য অতি সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে এখানে৷ ভারতবর্ষ থেকে সার্বিয়া, বিভিন্ন দেশে তোলা যে ছবিগুলি রয়েছে এখানে, সেগুলি বেশ প্রতীকী ও তাৎপর্যবহ৷ ‘জলবায়ু পরিবর্তনের মুখ' ছিল এ বছরের থিম৷ মানুষেরই কিছু অবিমৃশ্যকারী কাজের ফল জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্বের উপর যার প্রভাব মারাত্মক৷ অবশ্য আজ মানুষ ধীরে ধীরে তার কাজের পরিণাম উপলব্ধি করতে পারছে, তাই পরিবেশ সুরক্ষায় সুচেতনার জাগরণও ঘটছে৷ শিশুদের মধ্যেও যে পরিবেশ সংরক্ষণের চেতনা জাগছে, সেটা দ্বিতীয় ছবি থেকেই প্রমাণিত৷

কিন্তু মুশকিল হলো, এই শিশুরাই আমাদের মতো বড়দের কাজকর্ম দেখে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে৷ তৃতীয় ও পঞ্চম ছবিতে রয়েছে মাটিতে মিশে না যাওয়া ( নন বায়ো ডিগ্রেডেবল) আবর্জনা পরিবেশের ভীষণ ক্ষতি করে৷ একথা আমরা বাচ্চাদেরও শেখাই৷ কিন্তু তারপরই আমাদের বাচ্চারা দেখে, আমরা পলিথিন প্যাকেটে করে বাজার থেকে জিনিসপত্র নিয়ে আসছি, আর সেই পলিথিন যত্রতত্র ফেলে দিচ্ছি৷ এ থেকে শিশুরা শিখছে, ‘এমন অনেক বিষয় আছে, যেগুলি সম্বন্ধে যা শেখানো হয়, তার উল্টোটাই করতে হয়'৷ সমুদ্রসৈকত হোক বা পাহাড়, আমরা পিকনিক করতে যাই, আর বিভিন্ন ক্ষতিকর আবর্জনা আমরা সেখানে ফেলে আসি৷ এমনকি আজ হিমালয়ের উচ্চতম স্থানগুলিও রেহাই পাচ্ছে না৷ একটা ব্যক্তিগত কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতার কথা বলি৷ আমার বাচ্চাকে শিখিয়েছি, গাছ কাটতে নেই, লাগাতে হয়৷

বছর তিনেক আগে হঠাৎ দেখলাম আমাদের গ্রামে রাস্তা চওড়া করার জন্য শতাব্দী প্রাচীন ( হয়ত বা কয়েক শতাব্দী প্রাচীন ) বিরাট বিরাট শিরীষ গাছগুলিকে নির্মমভাবে কেটে ফেলা হলো কোনো নতুন গাছ না লাগিয়েই৷ আমার শিশুকন্যা আমাকে প্রশ্ন করেছিল, ‘‘মা, গাছ কাটা তো খারাপ কাজ, তাহলে এতগুলো গাছ কেটে ফেলল কেন?'' বিশ্বাস করুন, আমি কোনো উত্তর দিতে পারিনি৷ কীভাবে তাকে আমি বলব যে, বড় হলে আমাদের মধ্যে একটা জিনিস জন্ম নেয় যার নাম ‘হিপোক্রেসি'৷ যতক্ষণ না আমরা এই হিপোক্রেসির হাত থেকে মুক্তি পাচ্ছি, ততক্ষণ আমাদের কথা আর কাজের মধ্যে রয়ে যাবে বিস্তর ফারাক৷ আমরা অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করে চলি, ‘কর্তব্য বিষয়ে ভালো ভালো কথার জন্ম হয়েছে আমার বলার জন্য, আর অন্যদের করার জন্য', অন্তত আমার দেশে৷ তাই আমরা স্লোগান দিই, ‘গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান'৷ কখনোই বলি না, ‘এসো গাছ লাগাই, প্রাণ বাঁচাই'৷ আমাদের বাসের পিছনে লেখা থাকে না, ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলি', লেখা থাকে ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলুন'৷ অর্থাৎ আমার কোনো দায় নেই!

তবুও আশার কথা, সর্বত্রই কিছু ব্যতিক্রমী মানুষ থাকেন, কথা নয়, কাজই যাঁদের জীবনাদর্শ৷ তাঁদের কাজের ফলেই সভ্যতা কালো থেকে আলোর দিকে, মন্দ থেকে ভালোর দিকে এগিয়ে চলে৷ তাঁদের কথা মনে রেখেই আমরা নিজেদের সন্তান-সন্ততির জন্য আগামীদিনে একটু অন্যরকম পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে সাহস পাই৷ আর সর্বোপরি কবি তো বলেইছেন, ‘‘মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ''৷ যাই হোক, ছবিঘরটি খুব ভালো লাগল৷ সবাই ভালো থাকবেন৷ এই দীর্ঘ ই-মেলটি পাঠিয়েছেন কেকা প্রধান, বিপিএইচএন, পাথরডিহি, বাগমুন্ডী, পুরুলিয়া থেকে৷

- বোন কেকা, আশাকরি আপনার এই সুন্দর ই-মেলটির বক্তব্য পাঠক বন্ধুদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে৷ তবে আপনার আগামী ই-মেলের আকার যদি একটু ছোট হয় তাহলে আমাদের জন্য কিছুটা সুবিধা হবে৷

আপনাদের দপ্তর থেকে অনেক কিছু জেনেছি শিখেছি৷ আপনাদের নিরলস প্রচেষ্টায় সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে৷ রকমারি আয়োজনের ডালি শ্রোতা-পাঠকদের আকর্ষণ করেছে৷ বিশ্বের চলমান ঘটনাবলী, বিনোদন, রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রযুক্তি বিষয়ক নানা তথ্য জানতে পারছি৷ বর্তমান বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর কিছু সিরিজ সংযোজন করলে ভালো হয়৷ যেমন অটিজম-এর টুকিটাকি, সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, এইডস ও সন্ত্রাস৷ পরিশেষে ডয়চে ভেলে পরিবারের সবাইকে প্রীতিময় ভালোবাসা জানাই৷ ডা. এসএমএ হান্নান, প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক পাছশুয়াইল রেডিও শ্রোতা ক্লাব, হরিপুর, চাটমোহর, পাবনা৷

- ধন্যবাদ দু'জনকেই লেখার জন্য৷

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

নির্বাচিত প্রতিবেদন

Attachments
Image
Publish Date
02/10/2014